its-alive-03-640x384কল্পনা করুন, সুউচ্চ অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের বাইরে পা দিয়েই আপনি সূর্যালোকে উজ্জ্বল একটি খামারের দৃশ্য দেখতে পেলেন। বারান্দার কাছেই গাছের সারি। চারতলার একটি বাগান থেকে আপেল পেড়ে কামড় দিচ্ছেন। পাঁচতলায় দুধের খামারে কর্মরত একজন কৃষকের সঙ্গে আপনার কুশল বিনিময় হলো।
কাচের দেয়ালঘেরা লিফটে চড়ে ভবনের নির্দিষ্ট কর্মস্থলে যেতে গিয়ে হয়তো পেতে পারেন আরও কিছু। যেমন: একটি তলায় ধানখেত আর অন্যটিতে ফলের বাগান। এই সুউচ্চ বাগানবাড়িটির রয়েছে নিজস্ব তাপনিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা। এটি বৃষ্টির পানি ধরে রাখার পাশাপাশি ঘরোয়া আবর্জনাকে উদ্ভিদের খাবারে রূপান্তর করতে পারে।
এসব কিন্তু ভবিষ্যতে ভিনগ্রহে বসতি স্থাপনের মতো কোনো কল্প-চলচ্চিত্রের দৃশ্যের বিবরণ নয়; বেলজিয়ামের স্থপতি ভাঁসোঁ কলোবোর তৈরি একটি ‘নাগরিক খামারের’ নকশা। তিনি মনে করেন, ১৩২ তলা ওই কৃষি খামারটি হবে কল্পনার চেয়েও বেশি স্বাস্থ্যকর, সুখী ও আরামদায়ক নাগরিক জীবনের বাস্তবায়ন।
গবেষকদের আনুমানিক হিসাবে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে ৬০০ কোটি মানুষ শহরের বাসিন্দা হবে। সম্ভাব্য ওই বিপুল জনসংখ্যার জন্য শহর এলাকায় পর্যাপ্ত খাবার, পানি ও জ্বালানির উৎস ক্রমে কমে আসছে। তাই জনবহুল শহরের জন্য এসব চাহিদা পূরণে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও ‘জীবন্ত ব্যবস্থা’ অর্জনের বিষয়টি জরুরি।
৩৬ বছর বয়সী কলোবো বলেন, ভবিষ্যতে বেঁচে থাকার নতুন নতুন পদ্ধতির খোঁজ করা দরকার। আগামীর শহরটি হবে ঘনবসতিপূর্ণ, সবুজ ও সংযুক্ত। কৃষি ও প্রকৃতিকে ২০৫০ সালের মধ্যে নাগরিক পরিমণ্ডলে ফিরিয়ে আনাটাই এখনকার লক্ষ্য। সবুজ ও টেকসই শহরে মানুষ ও পরিবেশের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। আর ভবিষ্যৎ শহরের প্রতিটি ভবনে অবশ্যই ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ, ছোট বিদ্যুৎ উৎপাদনব্যবস্থা’ রাখতে হবে।
কলোবোর প্রস্তাবিত খামারে মাংস, দুধ ও ডিম উৎপাদনের পাশাপশি থাকবে বাগান, তৃণভূমি ও ধানের মাঠ। আর অফিস ও ফ্ল্যাট বাড়ি এবং গণবিনোদনকেন্দ্রও থাকছে অন্য অনেক ভবনের মতোই। সৌরশক্তিকে যথাযথভাবে কাজে লাগানো হবে ওই খামার ভবনে।
টেকসই নাগরিক জীবনব্যবস্থা অর্জনের ব্যাপারটি মানুষ এখন পর্যন্ত কলোবোর দাবি, তাঁর ‘ড্রাগনফ্লাই’ প্রকল্পটি কোনো অংশেই কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। তিনি নিউইয়র্কের রুজভেল্ট আইল্যান্ডে নির্মাণের উপযোগী করে ওই সুবিশাল ‘উল্লম্ব খামারের’ নকশা তৈরি করেছেন। এএফপি।