শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট খেলতে নামা বাংলাদেশ দলের জন্য আতঙ্কই ছিল। কিন্তু সর্বশেষ শ্রীলঙ্কা সফর সে ভয় কাটিয়ে দিয়েছে অনেকটাই। আরেকটি শ্রীলঙ্কা সিরিজের আগে কাল দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা সাকিব আল হাসানও মনে করিয়ে দিলেন সেটি। বাংলাদেশ দল এখন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জেতার জন্যই খেলবে
২০ উইকেট নেওয়ার সামর্থ্য কি আছে বাংলাদেশ দলের?
সাকিব আল হাসান: আমাদের বোলিং আক্রমণ তো ভালো। তার পরও নির্ভর করে উইকেটের ওপর। যত ভালো বোলিং আক্রমণই হোক, ফ্ল্যাট উইকেট হলে তো কঠিন। তবে আমার বিশ্বাস, স্পোর্টিং উইকেট হলে আমাদের সামর্থ্য আছে ২০ উইকেট নেওয়ার।
সামর্থ্যটা কার বেশি? বোলারদের মধ্যে কাকে এগিয়ে রাখবেন—
সাকিব: সবাইকেই ভূমিকা রাখতে হবে। কেউ হয়তো ৫ উইকেট পাবে, কিন্তু বাকি সবাইকেও ১ উইকেট করে নিতে হবে। ফাস্ট বোলারদের বড় ভূমিকা থাকছে। আমাদের টেস্ট বোলিং আক্রমণ স্পিননির্ভর হলেও পেসারদেরও দায়িত্ব আছে। আর স্পিনারদেরও সামর্থ্য অনুযায়ী বল করতে হবে।
শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশ দলের পার্থক্য—
সাকিব: শেষবার শ্রীলঙ্কায় টেস্টে খুবই ভালো খেলেছে বাংলাদেশ। এখন যেহেতু নিজেদের মাঠে খেলা, একটু সুবিধা থাকবেই। গত এক-দুই বছর আমরা দেশের মাটিতে খুবই ভালো ক্রিকেট খেলছি। ওটা ধরে রাখতে পারলে মনে হয় না খুব একটা পার্থক্য থাকবে।
নিজেদের মাঠে যে ধরনের সুবিধা আশা করেন—
সাকিব: স্পোর্টিং উইকেটই ভালো। আমরা যদি স্পিন উইকেট বানাই এমন নয় যে, ওদের স্পিনার নেই বা ওদের ভালো ব্যাটসম্যান নেই যারা স্পিনের বিপক্ষে ভালো ব্যাটিং করতে পারে। সব মিলিয়ে স্পোর্টিং উইকেট হলেই ভালো। ভালো ব্যাট করলে ব্যাটসম্যানরা রান পাবে। ভালো বোলিং করলে বোলাররা উইকেট পাবে। দল হিসেবে আমরা এখন অনেক অভিজ্ঞ। সামপ্রতিক সময়ে ব্যক্তিগত ও দলগতভাবে ভালো খেলছি। স্পোর্টিং উইকেট হলে খারাপ হবে না।
এবার কারও চোট বা ফর্ম নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। এটা কি আত্মবিশ্বাস বাড়াবে?
সাকিব: শেষ এক-দুই বছর ধরে আমাদের দল খুব ভালো খেলছে। স্বাভাবিকভাবে সবার আত্মবিশ্বাস অনেক বেশি। পারফরমারের সংখ্যাও অনেক বেশি। দলের ভেতর একটা ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা সব সময় চলছে। এমনকি যারা দলে নেই তারাও ভালো পারফর্ম করছে। এটা এক দিক থেকে চাপও। তবে এই চাপ দলের জন্য ভালো।
শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে কে বড় হুমকি—
সাকিব: সবাই, আউট তো সবাইকেই করা লাগবে। টেস্ট জিততে হলে ২০ উইকেট নিতে হবে। তার পরও সাঙ্গাকারা, জয়াবর্ধনে, ম্যাথুস আছে। সর্বশেষ সিরিজে অনেকেই ভালো খেলেছে। ওপরের দিকের ৬-৭ ব্যাটসম্যান তো সব সময়ই হুমকি।
সিরিজের প্রস্তুতি কেমন হলো—
সাকিব: আমার মনে হয় ভালো। খুব বেশি ম্যাচ খেললেই যে প্রস্তুতি ভালো হবে এমন নয়। দুটি ম্যাচ হয়েছে, কিন্তু ভালো মানের ম্যাচ খেলা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমার কাছে মনে হয় সেটা হয়েছে। যদিও আমি ছিলাম না, তবে পত্রিকায় দেখেছি, টেলিভিশনের খবরে দেখেছি।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে লক্ষ্য—
সাকিব: সব সময় আমরা জেতার জন্যই খেলি। ড্র কিংবা ভালো খেলব, ওই দিন অনেক আগেই শেষ। জেতার জন্য অবশ্যই খেলব। পুরো দলই সেভাবে চিন্তা করছে। তবে যেহেতু পাঁচ দিনের খেলা, অনেক সেশন আছে। খেলাটাকে ছোট ছোট সেশনে ভাগ করে নিতে হয়। সেশনগুলো জিততে পারলে ভালো ফলাফল করা সম্ভব।
ওপেনিং জুটি নিয়ে মন্তব্য—
সাকিব: বলা মুশকিল কে খেলবে না খেলবে। মার্শাল কিছু ম্যাচ (দুটি টেস্ট) খেলেছে। শামসুর এখনো খেলেনি। ইমরুল খেলেছে, অভিজ্ঞতা আছে, যদিও অনেক দিন বাইরে ছিল। দায়িত্ব সবারই। যে নতুন এসেছে তারও দায়িত্ব আছে। বাংলাদেশের সেরা ১৫ জন খেলোয়াড়ই এখানে, এরা পারফর্ম করেই এসেছে। একটা দলে দু-একজন পারফর্ম করলে খুব কম ম্যাচই জেতা যায়।