শীতে ঠোঁট, ত্বক ও পায়ের শুষ্ক হয়ে যায়। এরজন্য সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে পায়ে। পা ফাটার বিড়ম্বনা হতে রক্ষা পেতে জেনে নিন কয়েকটি চটজলদি টিপস। ঘরোয়া উপাদান দিয়ে সহজেই পরিচর্যা করা যায় এরকম কয়েকটি পদ্ধতি বাতলিয়েছেন আকাঙ্ক্ষা’স গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডের কর্ণধার জুলিয়া আজাদ।

সুন্দর এক জোড়া পা-এর অধিকারী হওয়ার জন্য দরকার পা’য়ের নিয়মিত চর্চা। আর এ চর্চার জন্য ঘরোয়া উপাদানের তৈরি ফুট মাস্ক পায়ে লাগাতে পারেন।

লেবু, গ্লিসারিন ও গোলাপ জল মাস্ক : প্রথমে একটি গামলায় গরম পানি নিয়ে তাতে কাঁচা লবণ, লেবুর রস, গ্লিসারিন এবং কয়েকটি গোলাপ পাপড়ি যোগ করুন। এই পানিতে প্রায় ১৫-২০ মিনিটের জন্য পা ডুবিয়ে রাখতে হবে। এরপর একটি ঝামাপাথর বা পায়ের স্ক্রাবার ব্যবহার করে, পায়ের নিচের দিকে ঘষে ঘষে পরিষ্কার করুন। এবার গামলা থেকে পা তুলে পানি মুছে নিয়ে ১ টেবিল-চামচ  গ্লিসারিন, ১ কাপ গোলাপ জল এবং ১ টেবিল-চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করে ফেটে যাওয়া পায়ে লাগিয়ে নিন। এভাবে দিনে দু’বার করা ভালো। এরপর মোজা পরে নিন। দেখবেন রাতারাতি পা ফাটা চলে যাবে। এটা পা ফাটা রোধে অত্যন্ত কার্যকরী একটা মিশ্রণ।

 

ভেজিটেবল তেল : পা ফাটার প্রধান কারণ হল শুকনো চামড়া। শুষ্ক ত্বকের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বাড়িতে থাকা ভেজিটেবল তেল যেমন- সয়াবিন, সূর্যমুখী, বাদাম ইত্যাদি প্রতিশোধক হিসেবে কাজ করে। পা পরিষ্কার করে ভালোভাবে শুকিয়ে ফাটা অংশে ভেজিটেবল তেল মালিশ করে মোটা একজোড়া মোজা পরে নিন। প্রতিদিন সকালে পা ধোয়ার পর ভেজিটেবল তেল ব্যবহার করে দেখুন ভালো উপকার পাবেন। 

কলা এবং আভাকাডোর মাস্ক : একটি পাকা কলা ভালো করে চোটকে নিন। গোড়ালি ও পায়ের ফাটা অংশের উপর তা লাগিয়ে প্রায় ১০ মিনিট রাখুন। এরপর পা ধুয়ে ফেলুন। এছাড়াও পাকা কলা ও আভাকাডো বা সবুজ নারিকেলের সাদা নরম অংশ ব্যবহার করে বাড়িতে পা’য়ের মাস্ক তৈরি করতে পারেন। মাস্ক তৈরি করতে একটি পাকা কলা ও আধা আভাকাডো নিন। এগুলো একসঙ্গে একটি পাত্রে মিশিয়ে পায়ে লাগান। এই পেস্ট পায়ের ত্বক কোমল ও মসৃণ রাখতে সাহায্য করবে।

পা ফাটা রোধে লেবু : ১৫-২০ মিনিটের জন্য গরম পানিতে পা ভিজিয়ে পরিষ্কার করে ১ টেবিল-চামচ ভ্যাজলিন ও ১টি আস্ত লেবুর রস নিন। পায়ের ফাটা অংশসহ অন্যান্য অংশের উপর এই মিশ্রণ ভালো করে মালিশ করে একটি পশমি মোজা পরে নিন। ঘুমোতে যাওয়ার আগে এই মিশ্রণ ব্যবহার করুন। সকালে ঘুম থেকে উঠে পা পরিষ্কার করে নিন, উপকার পাবেন।

মধু : এটি পায়ের ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। একটি বালতির অর্ধেক পরিমাণ গরম পানিতে ১ কাপ মধু মেশান। প্রায় ১৫-২০ মিনিটের জন্য পা এই পানিতে ডুবিয়ে রাখুন। তারপর পা শুকিয়ে মোজা পরে নিন। নরম ও নমনীয় পায়ের জন্য এটা খুব ভালো কাজ করবে।

 

চালের গুঁড়া : পায়ের স্ক্রাবিংয়ের জন্য অত্যন্ত উপকারী উপাদান। স্ক্রাবিং পেস্ট তৈরি করতে একটি বাটিতে ৩-৬ টেবিল-চামচ চালের গুঁড়া নিন। এর সঙ্গে আপেল কুচি ও কয়েক চামচ মধু মেশান। এই পেস্ট দিয়ে পা ভালো করে স্ক্রাবিং করে নিন। এরপর ১০ মিনিটের জন্য গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখুন। খেয়াল করে দেখবেন পা থেকে মৃত ত্বক সুন্দরভাবে উঠে যাচ্ছে। 

অলিভ তেল : ত্বক মসৃণ নরম সুস্থ রাখতে সবচেয়ে ভালো প্রাকৃতিক উপাদান হল অলিভ অয়েল। একটি বোতলে জলপাইয়ের তেল, লেবু বা ল্যাভেন্ডার তেল কয়েক ফোটা নিয়ে ভালোমতো মেশান। এবার একটি তুলোর বল করে এর সাহায্যে অলিভ তেলের মিশ্রণটি আলতো করে ১০-১৫ মিনিটের জন্য বৃত্তাকারে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে পায়ে মালিশ করুন। এরপর পায়ে মোজা পরেন নিন। ১ ঘন্টা পর তা খুলে ফেলুন।

পা ফাটা রোধে এই পদ্ধতিগুলো নিয়ম করে পালন করলে ভালো ফল পাবেন। তবে শীতের সময় প্রচুর পরিমাণে পানি, ফল ও টটকা সবজি খেতে ভুলবেন না যেন।