পাঁচ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে ৬০ হাজার কোটি টাকার সংশোধিত এডিপি (আরএডিপি) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ৩৮ হাজার আটশ কোটি এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ২১ হাজার দুইশ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।

পাঁচ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে ৬০ হাজার কোটি টাকার সংশোধিত এডিপি (আরএডিপি) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ৩৮ হাজার আটশ কোটি এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ২১ হাজার দুইশ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। সংশোধিত এডিপিকে পদ্মা সেতুর বরাদ্দ দুই হাজার ৪২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা কমানো হয়েছে। মূল এডিপিতে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ছয় হাজার আটশ ৮৮ কোটি টাকা।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বৃহস্পতিবার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও এনইসি চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ সময় পরিকল্পনা সচিব ভুঁইয়া সফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বাড়তি পাঁচ হাজার কোটি টাকা পরবর্তীতে ভালো কাজে বরাদ্দ দেওয়া হবে।’ অর্থমন্ত্রীকে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘তিনি অত্যন্ত মুরব্বি মানুষ। তিনি এ বয়সে যা করেন সেটি অনেক। তাই এ বিষয়ে আমি কিছু বলব না।’

৫৫ হাজার কোটি টাকা ধরে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে পরিবহন খাতে। এ খাতের সড়ক পরিবহন, সেতু, রেলওয়ে, নৌ ও বেসামরিক পরিবহনসহ মোট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৯ হাজার চারশ ৫০ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ছয় হাজার ৯৩৮ কোটি ৮৭ লাখ এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে দুই হাজার পাঁচশ ১১ কোটি ২৬ লাখ টাকা।
দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বিদ্যুৎ খাত। এ খাতে মোট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সাত হাজার আটশ চার কোটি ১১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের চার হাজার পাঁচশ ৯৫ কোটি এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে তিন হাজার দুইশ ৯ কোটি ১১ লাখ টাকা।

তৃতীয় অবস্থানে থাকা শিক্ষা ও ধর্ম খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সাত হাজার একশ ৮৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের পাঁচ হাজার পাঁচশ ৭৩ কোটি ৪৬ লাখ এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে এক হাজার ছয়শ ১৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

অন্যান্য খাতে বরাদ্দ হচ্ছে, কৃষি খাতে তিন হাজার একশ ৮৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের দুই হাজার একশ ১০ কোটি ৮৫ লাখ এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে এক হাজার ৭২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান খাতে মোট ছয় হাজার ৭০ কোটি ১১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের তিন হাজার ৯৪৩ কোটি ৭০ লাখ এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে দুই হাজার একশ ২৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা। পানিসম্পদ খাতে মোট বরাদ্দ এক হাজার ছয়শ ৩২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের এক হাজার একশ ৮৭ কোটি ৯৪ লাখ এবং বৈদেশিকসহায়তা থেকে চারশ ৪৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

শিল্প খাতে মোট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে দুই হাজার সাতশ ১৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের পাঁচশ ২৩ কোটি পাঁচ লাখ এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে দুই হাজার একশ ৯৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। তৈল, গ্যাস ও প্রাকৃতিক সম্পদ খাতে মোট বরাদ্দ এক হাজার ছয়শ ৪২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের এক হাজার ৬৫ কোটি এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে পাঁচশ ৭৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।

যোগাযোগ খাতে মোট বরাদ্দ ৭৮৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ১৭৮ কোটি ৯৬ লাখ এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৬০৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা। ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ন খাতে মোট প্রস্তাবিত বরাদ্দ ৪ হাজার ৭২৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ৩ হাজার ৩১ কোটি ৩১ লাখ এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ১ হাজার ৬৯৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। ক্রীড়া ও সংস্কৃতি খাতে মোট ২৫৫ কোটি ৯২ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ২৪১ কোটি ২৮ লাখ এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ১৪ কোটি ৬৪ টাকা।

স্বাস্থ্য, পুষ্টি, জনসংখ্যা ও পরিবার কল্যাণ খাতে মোট বরাদ্দ ৪ হাজার ১০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ১ হাজার ৫০৮ কোটি ৮০ লাখ এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ২ হ্জাার ৫০১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। গণসংযোগ খাতে মোট বরাদ্দ ৮১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ৬৮ কোটি ৯০ লাখ এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ১৩ কোটি টাকা। সমাজকল্যাণ, মহিলা বিষয়ক ও যুব উন্নয়ন খাতে মোট বরাদ্দ ৪৪৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ২৩৪ কোটি ৪২ লাখ এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ২১৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। জনপ্রশাসন খাতে মোট বরাদ্দ ১ হাজার ৩১০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ৩৬৬ কোটি ৯ লাখ এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৯৪৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে ১ হাজার ৫২১ কোটি ৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ৪৯২ কোটি ২৫ লাখ এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ১ হাজার ২৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এ ছাড়া শ্রম ও কর্মসংস্থান খাতে মোট বরাদ্দ ৩৩১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ২২৪ কোটি এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ১০৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা।