একই প্রশ্ন বারবার করলে অনেক সময় তো মুখ ফসকেও ভুল হয়! কেউবা বিনয়ী হয়েও প্রতিদ্বন্দ্বীর নাম বলেন। পেলে কিংবা ডিয়েগো ম্যারাডোনা অবশ্য সস্তা বিনয়ের ধার ধারেননি কখনোই। সর্বকালের সেরার প্রশ্নে তাঁদের মুখও কখনো ফসকায়নি! পেলের কাছে উত্তরটা যেমন পেলে, তেমনি ম্যারাডোনার কাছে ম্যারাডোনা। আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি আরও একবার বললেন, ফুটবলে পেলে সব সময়ই দ্বিতীয় ছিল, এখনো তাই আছেন।
কথাটা পুরোনোই। তবে উপলক্ষটা অবশ্যই আলাদা। ১৩ জানুয়ারি জুরিখে বসে ছিল ফিফা-ব্যালন ডি’অর পুরস্কারের অনুষ্ঠান। সেদিন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর হাতে ওঠে ফিফা-ব্যালন ডি’অর, পাশাপাশি পেলেকে দেওয়া হয় বিশেষ সম্মানসূচক ব্যালন ডি’অর। ব্রাজিলকে তিনবার (১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৭০) বিশ্বকাপ জেতালেও পেলে কখনোই ফিফা-ব্যালন ডি’অর পাননি। তখন পুরস্কারটা দেওয়া হতো শুধু ইউরোপিয়ান খেলোয়াড়দের। ফুটবলের রাজাকে সম্মান জানাতে এবারই প্রথম বিশেষ সম্মানসূচক ব্যালন ডি’অর দেওয়া হলো ৭৩ বছর বয়সী পেলেকে।
জুরিখ থেকে এই পুরস্কার নিয়েই ব্রাজিল কিংবদন্তি যান সংযুক্ত আরব আমিরাতে। বিশ্বব্যাপী এমিরেটস এয়ারলাইনসের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন সেখানে। দুবাইয়ের ক্রীড়াদূত ম্যারাডোনা বর্তমানে আছেন দুবাইয়েই। পরশু দুবাইয়ের তৃণমূল ফুটবলারদের জন্য এক কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে সংবাদ সম্মেলনে ম্যারাডোনা পেয়ে সাংবাদিকেরা তুললেন পেলের পুরস্কার পাওয়ার প্রসঙ্গটা। আর যায় কোথায়! প্রশ্নকর্তাকে ম্যারোডোনার স্বভাবসুলভ জবাব, ‘আপনি কীভাবে বলতে পারলেন, পেলে আমার আগে ব্যালন ডি’অর পেয়েছে? আমি পুরস্কারটি প্যারিসে পেয়েছি (১৯৯৬ সালে)। কাজেই আমার আগে পেলে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে পুরস্কারটি পেল, এটা বড় ভুল।’
প্রায় একক নৈপুণ্যে আর্জেন্টিনাকে ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জেতানো ম্যারাডোনা এরপরই যোগ করেছেন, ‘যখন ম্যারাডোনার সঙ্গে তুলনার কথা বলবেন, আমার মতে, ফুটবলে পেলে সব সময়ই দ্বিতীয় স্থানে ছিল। এমনকি ব্রাজিলেও আয়ারটন সেনার (তিনবারের ফর্মুলা ওয়ান চ্যাম্পিয়ন) পর ও দ্বিতীয় সেরা ক্রীড়াবিদ। দুঃখের বিষয়, পেলে সব সময়ই দ্বিতীয় ছিল, এখনো তাই আছে, ভবিষ্যতেও তাই থাকবে।’ অন্য রকম একটা খোঁচাও মেরেছেন, ‘ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে পুরস্কার দিতে গিয়ে পেলে ওর নাম বলেছে “ক্রিস্টিয়ানো লিওনার্দো”। এটাই প্রমাণ করে মানুষ হিসেবে তার মানসিক ভারসাম্য কোথায়।’
পেলেকে পুরস্কারটি দেওয়া ‘বড় ভুল’ হয়েছে, এমন দাবি করে ফিফাকেও একহাত নিয়েছেন ম্যারাডোনা, ‘আমি খুশি, আমি ফুটবল এবং আমার নিজের জন্য কাজ করছি। আমি দুবাইয়ে আমার বাড়িতেই আছি। কিন্তু পেলে তো থাকে ফিফায়।’ ওয়েবসাইট।